Saturday, January 26, 2019

নাক ডাকা বন্ধ করার কিছু সহজ ও ঘরোয়া উপায়

ছবি: সংগৃহীত

নাক ডাকা অন্যের অশান্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। অন্যের শান্তির ঘুমে যথেষ্ট ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। আপার রেসপিরেটারি ট্র্যাকে এয়ার ভাইব্রেশনের ফলে নাক ডাকে মানুষ। জীবন যাপন পদ্ধতিতে কিছু বদল এনে এই অভ্যেসের পরিবর্তন সম্ভব। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, যাঁরা নাক ডাকেন বেশিরভাগই স্লিপ অ্যাপনিয়া কন্ডিশনে আক্রান্ত।

 ‘‘আপনার সঙ্গীকে খেয়াল করতে বলুন যদি এমন হয় আপনি খানিকটা নাক ডাকার পরে পজ নেন তা হলে এটা স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ। সকালে উঠে যদি মাথা ধরে, মুখ শুক‌নো লাগে, রাতে বেশি প্রস্রাব পায় এগুলো সব স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ।''

কি কি উপায় অবলম্বন করে এটা কমাবেন

1. ঘুমনোর দিক পরিবর্তন করুন
চিৎ হয়ে শোবেন না, তাহলে জিভের পিছন দিক টাগরায় লেগে বেশি নাক ডাকে। যে কোনও পাশে কাত হয়ে ঘুমোন।

2. খোলা নাসারন্ধ্র
নাক বন্ধ থাকলে বেশি নাক ডাকে মানুষ। তাই ঘুমনোর আগে গরম জলে স্নান করুন। নাক ভাল করে ঝেড়ে পরিষ্কার করে শুইতে যান। প্রয়োজনে নাসাল স্ট্রিপ নিন।

3. অ্যালকোহল বন্ধ করুন
গলার পিছনের দিকের মাংসের স্থিতিস্থাপকতা কমিয়ে দেয়। ঘুমনোর ঘন্টা চার পাঁচ আগে একেবারই অ্যালকোহল খাবেন না।

4. পানির ভারসাম্য বজায় রাখুন
সারা দিনে শরীরে জল ঠিকমতো পৌঁছলে নাকও হাইড্রেটেড থাকে। ফলে নাক কম ডাকে মানুষ।

5. মাথা একটু তুলে শোবেন
একটি অতিরিক্ত বালিশ নিয়ে মাথা একটু তুলে শোবেন। এতে নাক ডাকার থেকে রেহাই মিলবে।

6. ওজন কমান
মোটাদের নাক ডাকার প্রবণতা বেশি থাকে। স্বাস্থ্যকর খাবার ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

7. ভাল ঘুমের অভ্যেস করুন
যাঁদের ঘুম ভাল করে হয় না তারা বেশি নাক ডাকেন। তা ছাড়া কম ঘুম থেকে শরীরে আরও নানা রোগ বাসা বাঁধে। দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুম তাই জরুরি।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করবে কলা

ছবি: সংগৃহীত

গত বেশ কয়েক বছর যাবৎ আমাদের দেশে হাই ব্লাড প্রেসারের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আর সব থেকে ভয়ের বিষয় হলো উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগরই বয়স ৪৫-এর নিচে। এমন পরিস্থিতিতে প্রত্যেকের প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়া উচিত, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ ফলটিতে উপস্থিত প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশের পর সোডিয়ামের প্রভাবকে কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে আরও একাধিক শারীরিক সমস্যার ও উপকার আছে এই কলাতে।

প্রতিদিন একটা করে কলা খেলে ব্লাড প্রেসার ছাড়াও যেসব রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে সে সম্পর্কে জেনে নিন...

১. হাড় শক্তপোক্ত হয়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত একটা করে কলা খাওয়া শুরু করলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হতে সময় লাগে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হাড় শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে অস্টিওআথ্রাইটিস মতো বোন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।

২. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটাতে বাস্তবে কলার কোনো বিকল্প নাই। কলাতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশের পর চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে রেটিনার ক্ষমতাও এতটা বৃদ্ধি পায় যে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন বা কোনো ধরনের চোখের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না বললেই চলে।

৩. সার্বিকভাবে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে
বছরের শেষেও অফিসে এমন কাজের চাপ যে ক্লান্তি ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে বাড়তে মাত্রা ছাড়িয়েছে? তাই চিন্তা না করে এমন পরিস্থিতিতে একটা কলা খেয়ে নিবেন সব সময়। তাহলেই দেখবেন অনেক চাঙ্গা লাগবে। কারণ ক্লান্তি দূর করতে কলার কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৪. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
কলা খাওয়ার পর যদি কলার খোসা মুখে লাগাতে পারেন, তাহলে একদিকে যেমন ত্বকের রোগের প্রকোপ কমে, তেমনি স্কিনের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসে। আসলে কলার খোসার ভেতরে থাকা একাধিক উপাকারী উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৫. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, কলার ভেতরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটে।

৬. স্ট্রেস কমে চোখে পরার মতো
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে রোজের ডায়েটে কলাকে জায়গা করে দিলে শরীরে ট্রাইপটোফিন নামক একটি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে স্ট্রেস লেভেল তো কমেই, সেই সঙ্গে মানসিক অবসাদের মাত্রাও কমতে সময় লাগে না।

৭. পুষ্টি ঘাটতি দূর হয়
শরীরের সচলতা বজায় রাখতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট মাত্রায় ভিটামিন এবং মিনারেলের প্রয়োজন পরে শরীরের। আর এইসব উপাদানের যোগান শরীর পায় খাবার থেকে। সমস্যাটা হলো আজকের প্রজন্ম এতটাই ব্যস্ত যে তাদের হাতে ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করার সময় নেই। ফলে যা হওয়ার তাই হয়, পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার কারণে নানাবিধ রোগ এসে বাসা বাধে শরীরে। এমন পরিস্থিতি কলা কিন্তু দারুণ কাজে আসতে পারে।

৮. টক্সিক উপাদানেরা সব বেরিয়ে যেতে শুরু করে
শুনতে আজব লাগলেও একথা ঠিক যে শরীরের ইতি-উতি উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দিয়ে দেহের প্রতিটি অঙ্গকে চাঙ্গা রাখতে কলার কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। কলাতে উপস্থিত প্রেকটিন নামক একটি উপাদান, শরীরের প্রবেশ করামাত্র ক্ষতিকর উপাদানদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে। ফলে রোগমুক্ত শরীরের অধিকারী হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগে না।

৯.অ্যানিমিয়ার মতো রোগ দূরে পালায়
কলায় বিদ্যমান প্রচুর পরিমাণ আয়রন শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বৃদ্ধি করে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এমন রোগে ভুগছেন, তারা আয়রন ট্যাবলেটের পাশাপাশি যদি নিয়ম করে কলা খেতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুণ উপকার মিলতে পারে।

১০. ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে
কলার শরীরে পটাশিয়াম ছাড়াও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে। আর কম খেলে যে ওজনও কমে, সে কথা কার না জানা।

১১.ডায়াবেটিসের মতো মরণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না
কলা খাওয়া মাত্র শরীরে কম-বেশি ৩ গ্রামের মতো ডায়াটারি ফাইবারের প্রবেশ ঘটে। এর প্রভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না। এই কারণেই টাইপ ১ এবং ২-দুই  ধরনের ডায়াবেটিস রোগীদেরই এই ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।