Thursday, January 17, 2019

কী হইতেছে তাবলীগ জামাতের ভিতরে? সমস্যার সমাধান হবে কি ভারতে?

সরকার তাবলীগ জামাতের বিভক্তি মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বিশ্ব ইজতেমা করার জন্য সংগঠনটির দুই গ্রুপের প্রতিনিধিদের ভারতের দেওবন্দে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে।এই উপমহাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ভারতের দেওবন্দে ফতোয়ার জন্য পাঠানোর এই উদ্যোগকে সরকারের পক্ষ থেকে তাবলীগ জামাতকে ঐক্যবদ্ধ রাখার শেষ চেষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
 ছবি: সংগৃহীত

তাবলীগ জামাতের মধ্যে বিভক্তির কারণে এবার বিশ্ব ইজতেমা নির্ধারিত সময়ে হতে পারেনি এবং অনিশ্চয়তা আরো বেড়েছে। তাবলীগ জামাতের নেতা ভারতীয় সাদ কান্দালভিকে নিয়ে বাংলাদেশে সংগঠনটির প্রতিপক্ষ দুটি গোষ্ঠীই যার যার অবস্থানে অনড় রয়েছে। তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপ এবার আলাদা আলাদাভাবে ঢাকার কাছে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার তারিখ ঠিক করেছিল।

সেজন্য টঙ্গীর সেই ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে গত ২০১৮ইং সালের ১লা   ডিসেম্বর। সেই ঘটনার পরে সরকার তাবলীগের দু'টি গোষ্ঠীর সাথে বৈঠক করেছিল এবং সেই বৈঠকে ইজতেমা স্থগিত করা হয়েছিল।

"সাদ (কান্দালভি) কিছু কথা বলেছেন। এটা আলেম ওলামা সমাজ মনে করেন, সেটা কোরআন ও সুন্না বিরোধী। আবার সাদ সাহেবের পক্ষের লোকেরা বলছেন, উনি সেটাকে রুজু করেছেন, মানে প্রত্যাহার করেছেন। তো এখন দেওবন্দের কর্তৃপক্ষ এটাকে অর্থ্যাৎ এই রুজু করাটাকে গ্রহণ করেছেন কিনা বা তা কার্যকর হয়েছে কিনা -এটা দেখার জন্য বাংলাদেশ এর ধর্ম মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে তাবলীগের দুই পক্ষ দেওবন্দ যাবে।" 

তাবলীগে বিরোধ মেটানোর জন্য কয়েক দিনের মধ্যে ভারতের দেওবন্দে ফতোয়া নিতে যারা যচ্ছেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী নিজেই সেই দলের নেতৃত্ব দেবেন।কিন্তু বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত এর সাথে জড়িতরা আলাদা আলাদাভাবে কাজ করছেন।
ভারতের সাদ কান্দালভিকে নিয়েই এই যে বিভক্তি, সেই সাদ কান্দালভির পক্ষের অংশের আশরাফ আলী অভিযোগ করেছেন, হেফাজতে ইসলাম এখন তাবলীগ জামাতকেও নিয়ন্ত্রণে নেয়ায় সেখানে রাজনীতি ঢুকে এই বিভক্তি এসেছে।

"হেফাজতে ইসলামের সাথে আমাদের তাবলীগেরই একটা অংশের লিঁয়াজো হয়ে যাওয়ার কারণে বাইরের লোক ঢুকে গেছে। আর সেকারণে একটা রাজনৈতিক স্টাইল এখানে ঢুকে গেছে। "আশরাফ আলী আরো বলেছেন, "এখন আমাদের দুই অংশের মধ্যে একেবারে নীতিগত পার্থক্য হয়ে গেছে। এটা নয় যে শুধু মনমালিন্য হয়েছে এখানে মত পার্থক্য ও তৈরী হয়েছে। "সাদ কান্দালভি তাবলীগ জামাতে কিছু সংস্কারের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "ধর্মীয় শিক্ষা বা ধমীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত হবে না "। তাঁর এসব বক্তব্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য জায়গার মতো বাংলাদেশেও তাবলীগ জামাত বিভক্ত হয়ে পড়েছে  তাবলীগের নেতৃত্ব নিয়ে নিয়ে বিরোধও এই বিভক্তির অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করেন।

তবে ভারতের দেওবন্দে গিয়ে যে সমঝোতা হয়ে যাবে, সেটা তাবলীগের দুই পক্ষের এই নেতারা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না।ধর্ম প্রতিমন্ত্রীও বলছেন তারা একটা শেষ চেষ্টা করছেন।